Breaking News

দেশে সবচেয়ে বড় বেকার তৈরির কারখানা ছাত্রলীগ: রাব্বানী

বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বেকার তৈরির কারখানার নাম ছাত্রলীগ। এখানে কর্মমুখী কিছু শেখানো হয় না। মানে এক ধরনের ব্যবহার করে ছেড়ে দেয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী।

সম্প্রতি দেশের অন্যতম শিল্প গোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের পরিচালক (হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) পদে চলতি মাসে যোগ দিয়েছেন গোলাম রাব্বানী।

কাজে যোগদানের পর এক সাক্ষাৎকারে রাব্বানী বলেন; “ছাত্রলীগ হচ্ছে বেকার তৈরির কারখানা। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বেকার তৈরির কারখানার নাম ছাত্রলীগ। আমার কনসার্ন হচ্ছে, এখানে যতটা পারি ছাত্রলীগের কর্মস্থান করা। আমি যেহেতু এই সংগঠনটি করে এসেছি এবং ওন করি। এখানে কর্মমুখী কিছু শেখানো হয় না। এক ধরনের ব্যবহার করে ছেড়ে দেয়া হয়।”

গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘প্রয়োজনে মাথা গোনার জন্য, মিছিলে-মিটিংয়ে দল ভারি করার জন্য আমি তাদের নিচ্ছি, মাসেল ও ম্যান পাওয়ার ব্যবহার করছি। কিন্তু দিন শেষে তার চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে। ছাত্রলীগের বয়সও ২৯ বা ৩০। তখন সে চাকরিও পাচ্ছে না, পদও পেল না। সে সমাজের, পরিবারের জন্য সম্পদ না হয়ে বড় আপদ হয়ে গেল। ছাত্রলীগ শুধু তাদের ব্যবহার করছে, তাদেরকে প্রোডাক্টিভ, পজিটিভ কাজে ব্যবহার করছে না।’

প্রশ্ন তুলে গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কী কর্মসংস্থান সম্পাদক আছে না? যুবলীগে আছে, ছাত্রলীগে আছে। কর্মসংস্থান নিয়ে তারা কী কাজ করেছে? একটা উদাহরণও আমার কাছে নেই। তাই আমরা এই কাজ করতে চাই। তাদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করার সুযোগ আছে।’

নতুন চাকরিতে যোগদানের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে রাব্বানী বলেন, আমি এখানে জয়েন করার পরে গত ১০ দিনে অন্তত এক হাজার সিভি এসেছে। তাদের প্রত্যেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করা। কিন্তু তাদের আমি কোথায় কাজ দেবো? তারা কী পারে? প্রাইভেট সেক্টরে বুঝতে হবে, আমাকে বা যাকে নেবে, তার কাছ থেকে ৫ টাকা আয় করবে, সেই ৫ টাকা থেকে তাকে ১ বা ২ টাকা দেবো। দিস ইস দ্য থিউরি। তো আমাকে কনভিন্স হতে হবে যে, তাকে দিয়ে আমি ৫ টাকা আয় করতে পারব। সেটা আমি কীভাবে নিশ্চিত করব?’

ডাকসু সাবেক জিএস বলেন, ‘আমাদের মেইন ম্যাসেজটা হচ্ছে- আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস, যেটা এখন সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দরকার। ডিজিটাল মার্কেটিং বলেন, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, মোশন ডিজাইনিং ইত্যাদি। যেগুলো এখন আমাদের প্রয়োজন। এখন তো সবাই অনলাইনে আসছে। প্রত্যেকটি সেক্টরে সুযোগ হচ্ছে। এই জায়গায় আমাদের ছেলে-মেয়েদের বিরাট একটা শূন্যতা। খুবই গুটি কয়েকজন নিজের থেকে চেষ্টা করে করছে। সবাই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাচ্ছে। কিন্তু সবাই চাকরি চাচ্ছে।’

রাব্বানী বলেন, ‘কিছুদিন আগে সালমান এফ রহমান সাহেব একটা কথা বলেছিলেন, পরে অনেকেই ট্রল করেছেন। কিন্তু আমার কাছে বিষয়টি সত্য মনে হয়েছে। আমাদের দেশে বেকার অনেক, কিন্তু শিক্ষিত বেকার একজনও নেই। অর্থাৎ সুশিক্ষায় শিক্ষিত, কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত বেকার একজনও নেই। আমার কাজের জন্য এখন ভালো মানের গ্রাফিক্স ডিজাইনার দরকার। আমি তাকে ৫০ হাজারের ওপরে বেতন দেবো। কিন্তু আমি পাচ্ছি না। অর্থাৎ আপনি যদি ভালো মানের গ্রাফিক্স ডিজাইনার তৈরি করতে পারেন যেকোনো কোম্পানিতে ৫০ হাজারের ওপরে বেতন আছে। আপনি ভালো কোয়ালিটির ডিজিটাল মার্কেটিং জানেন, ৫০ হাজারের ওপরে বেতন আছে। আমার প্রোডাক্টটাকে ব্রান্ডিং করার ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল খুবই কম বাংলাদেশে।’

সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাব্বানী বলেন, ‘প্লিজ আপনি চাকরির জন্য সিভি নিয়ে আসার আগে নিজেকে তিন মাস, ছয় মাস পরিশুদ্ধ করেন, তৈরি করেন, সেটা কষ্ট হলেও। আগে নিজেকে সম্মৃদ্ধ করেন। আপনাকে আমি কেন নেব। এই প্রশ্নটি আপনি আগে নিজেকে করেন। একটা কোম্পানি, একটা টিভি চ্যানেল, একটা সংবাদপত্র আপনাকে কেন নেবে? অনার্স-মাস্টার্স তো সবাই করছে, সেটা দিয়ে আমি তাকে কী কাজে লাগাব? এটা অনেক বড় একটা প্রশ্ন, এটা নিয়ে বাস্তবিক সমস্যায় আমি পড়েছি। প্রত্যেককেই একই কথা বলছি, বারবার। এটা শেখ, ওটা শেখ। এটাই জাতীয়ভাবে তুলে ধরা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *