পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, চট করে দেশে ঢোকার চেষ্টা করবেন না, দেশের মানুষই আপনাকে খপ করে ধরে এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাড়ে ১৫ বছরে দেশটা ধ্বংস করে ফেলেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে দেশে গণহত্যা চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে গুম করে হত্যা করেছে। জন রোষানলে থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লজ্জা থাকা উচিত- তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহেনা অসংখ্য নেতাকর্মীকে বিপদে রেখে পালিয়ে যান। যে নেত্রী অসংখ্য নেতাকর্মীকে রেখে পালিয়ে যায়, তার নেতাকর্মীরা এই দেশের মানুষকে মুখ দেখায় ক্যামনে?
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাইবান্ধা জেলা খেলাফত মজলিসের আয়োজনে শহরের ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, শেখ হাসিনা গোটা দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করে ক্ষমতার মসনদে টিকে থাকতে চেয়েছিল। হাজার বছরেও শেখ হাসিনার মতো নির্মম কারও জন্ম হয়নি। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে যে এমন নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানো যায়, তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। শেখ হাসিনার মতো এত নির্মম, এত বর্বর কোনো মানুষের জন্ম হয়েছে কি না আমার সন্দেহ হয়।
মামুনুল হক বলেন, শেখ হাসিনা প্রতিহিংসা আর বৈষম্যের রাজনীতি করেছে। আওয়ামী লীগের মতো মোনাফেক শক্তিকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর পুনর্বাসিত হতে দেওয়া হবে না। মানুষকে গুমের পর গুম করেছে হাসিনা। মানুষ এখনও তাদের স্বজনদের খোঁজে ঘুরে বেড়ায়। তাদের ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকে। এই ছিল শেখ হাসিনার বাংলাদেশের চিত্র। এই বাংলাদেশ গড়ার জন্য এই দেশের হাজারো মানুষ রক্ত দেয়নি, এই বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনাকে আল্লাহ বিতাড়িত করে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রক্তস্নাত বিজয় এসেছে। স্বাধীনতা অর্জন করার চাইতে সেই স্বাধীনতার বিজয়কে ধরে রাখা কঠিন। ছাত্র-জনতার বিজয় ছিনিয়ে নিতে এখনও দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে। সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। সীমান্তের ওপার থেকে আপা সংবাদ পাঠায়- চট করে দেশে ঢুকে পড়বেন। আপা যেখানে আছেন ভালো আছেন সময়মতও আমরা ধরে নিয়ে আসব। এর আগে দেশে ঢোকার চেষ্টা করবেন না। এ দেশের মানুষের কবলে পড়লে আর বাঁচবেন না বলেন এই নেতা।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস গাইবান্ধা জেলা শাখার আহ্বায়ক মুফতি আবু ইউসুফ কাশেমীর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্য বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা ফজলুর রহমান। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমীর আব্দুল করিম, মাওলানা আব্দুল বাসেত, ওলামা পরিষদ গাইবান্ধা সভাপতি মুফতি মাহমুদুলল হাসানসহ জেলা খেলাফত মজলিস, যুব মজলিস ও ছাত্র মজলিসের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।