Breaking News

বান্ধবীকে দিয়ে বশীকরণ, সত্তরোর্ধ মুজিবুল হকের বিয়ের নেপথ্যে কিবরিয়া

সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের ব্যক্তিগত নানা বিষয় দেখভাল করতেন তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব গোলাম কিবরিয়া মজুমদার। এক পর্যায়ে আকস্মিক সত্তরোর্ধ মুজিবুল হকের সঙ্গে কিবরিয়ার কথিত বান্ধবী হনুফা আক্তার রিক্তার বিয়ে হয়। মন্ত্রীর এমন অসম বিয়ে দেশজুড়ে তুমুল আলোচনার ঢেউ তোলে। এসব নিয়ে খোদ রেল ভবনেও নানা মুখরোচক গল্প ছড়ায়।

কেউ কেউ বলেন, মন্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কিবরিয়া পরিকল্পিতভাবে বান্ধবীর সঙ্গে মন্ত্রীর বিয়ের বন্দোবস্ত করেন। তবে রহস্যজনক কারণে এসব বিষয়ে তৎকালীস মন্ত্রী মুজিবুল হক ছিলেন পুরোপুরি নির্বিকার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গোলাম কিবরিয়া সাবেক রেলমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএস) ছিলেন। টানা প্রায় আট বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এ সময় তার বিরুদ্ধে রেলের বড় বড় ঠিকাদারি কাজের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও অনিয়ম দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের আশীর্বাদে তার কিছুই হয়নি। পরে রেল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে তিনি রেলওয়ের বহুল আলোচিত কালোবিড়াল নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

সূত্র জানায়, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ছেলে কিবরিয়া সংসদ সচিবালয়ের একজন সাধারণ কর্মচারী ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত এমপি মুজিবুল হককে রেলমন্ত্রী করা হলে তার কপাল খুলে যায়। মুজিবুল হক কিবরিয়াকে একান্ত সচিব (পিএস) নিয়োগ করেন। পিএস পদ কাজে লাগিয়ে কমিশন বাণিজ্য ও নিয়োগ দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

রেল কর্মকর্তারা বলছেন, রেলমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ পাওয়া মুজিবুল হক বয়োবৃদ্ধ ছিলেন। এছাড়া নানা রোগে আক্রান্ত রেলমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের রুটিন দায়িত্বসহ দৈনন্দিন কাজও ঠিকমতো করতে পারতেন না। এর সুযোগ নেন তার পিএস কিবরিয়া। এ সময় তিনি মন্ত্রণালয়ের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রকারী হয়ে ওঠেন। এমনকি মন্ত্রণালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়ে গেলে মুজিবুল হক নিজেই তার পিএস কিবরিয়ার সঙ্গে পরামর্শের নির্দেশ দিতেন। ফলে কিবরিয়ার সিদ্ধান্তের বাইরে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তেমন কিছুই করার ছিল না।

শনিবার অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালানোর সময় গোলাম কিবরিয়া মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রতিহত করতে মাঠে সক্রিয় আওয়ামী ক্যাডার হিসাবে বিজিবির তালিকায় তার নাম রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *