Breaking News

আমুর এতো টাকার উৎস কোথায়, বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

আলিশান বাড়ি এবং রাজধানী ঢাকার ইস্কাটনে একটি বাগানবাড়ি রয়েছে। ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর তেমন আস্থা বা ভরসা না থাকায় বস্তায় বস্তায় টাকা রাখতেন বাড়িতে, যার প্রমাণ মেলে ৫ আগস্ট। বিক্ষুব্ধ জনতা ওইরাতে হামলা, ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেয় তার রোনালস রোডের বাড়িতে। ভাঙচুর চলাকালেই বহু মানুষকে টাকার বান্ডিল হাতে বের হতে দেখেছেন স্থানীয়রা।

ব্যক্তিজীবনে নিঃসন্তান আমু তার শ্যালিকা মেরী আক্তারের কন্যা সুমাইয়াকে দত্তক হিসেবে নিয়েছিলেন বহু বছর আগে। বর্তমানে দুবাইতে থাকা এই সুমাইয়ার বিয়ে হয়েছে দুবাইপ্রবাসী এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সঙ্গে। অবৈধ পন্থায় আয় করা শতকোটি টাকা সুমাইয়ার কাছে পাঠিয়েছেন আমু।

ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘এমন কোনো সেক্টর নেই যেখান থেকে টাকা পেতেন না আমু। সব টাকাই নগদে পৌঁছাত তার কাছে। লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতেন ভায়রা ফখরুল মজিদ কিরন। আমুর নাম ভাঙিয়ে কিরন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। শিল্পমন্ত্রী থাকাকালে আমুর এপিএস ছিলেন কিরন। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ূনেরও এপিএস ছিলেন এই কিরন। তিনি আমু ও হুমায়ুনের হয়ে সব তদবির নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিরনের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। সর্বশেষ শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ূনের আপন ছোট ভাই কিরন তার নিজের এলাকা ছেড়ে পড়ে থাকতেন ঝালকাঠিতে। কেবল সম্পদ ভান্ডারের দেখাশোনা আর পার্সেন্টেজ আদায় নয়, নির্বাচনী এলাকায় আমুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও দেখাশোনা করতেন তিনি।’

নলছিটি উপজেলার আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কালবেলাকে বলেন, আমুর সঙ্গে দেখা করতে হলে অনুমতি নেওয়া লাগত কিরনের। উন্নয়নমূলক সব কাজের ভাগ-বাটোয়ারা করতেন তিনি। তার কথার বাইরে বলতে গেলে এক পা-ও চলতেন না আমু। পরিস্থিতি এমন ছিল—কিরন যেন ছিলেন ছায়া আমু। এই কিরনের মাধ্যমেই বিভিন্ন সেক্টর থেকে শতশত কোটি টাকা কামিয়েছেন আমু, যার প্রায় পুরোটাই এখন দুবাইয়ে কিরনের মেয়ে সুমাইয়ার কাছে আছে বলে ধারণা সবার।

নতুন টাকা ছাড়া আমুর আরেকটি শখ ছিল স্বর্ণের নৌকা। যে কোনো অনুষ্ঠানে তাকে নিমন্ত্রণ করলে স্বর্ণের নৌকা উপহার দিতে হতো। তিনি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে স্বর্ণের নৌকা উপহার নেওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বর্ণের নৌকা উপহার নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তখন থেকে আমু স্বর্ণের নৌকা নেওয়া বন্ধ করেন।

গত ১৮ আগস্ট আমুর ব্যাংক হিসাব জব্দ করে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একই সময় তার পালিত সন্তান ও মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও ব্যাংক লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে আর প্রকাশ্যে আসেননি আমির হোসেন আমু। তিনি দেশে আছেন না পালিয়ে গেছেন—সেই তথ্য নেই কোনো সংস্থার কাছে।

আমুর অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর আমির হোসেন আমুর বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ২০ কোটি টাকারও বেশি স্থাবর-অবস্থাবর সম্পদের অভিযোগ আনা হয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর অনুসন্ধানের অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।

সূত্র : কালবেলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *