Breaking News

যে কারণে মুক্তি আটকে আছে মান্নার শেষ সিনেমা!

ঢাকাই সিনেমার দাপুটে অভিনেতা মান্না। ২০০৮ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই নায়ক। তার অভিনীত শেষ সিনেমা জাহিদ হোসেন পরিচালিত ‘জীবন যন্ত্রণা’, যা এখনও মুক্তির অপেক্ষায়। কয়েকবার এর মুক্তির পরিকল্পনা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। গত বছর ১৫ ডিসেম্বর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার কথা বলেছিলেন এর প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।

প্রিয় নায়কের মৃত্যুর ১৬ বছর পর তার সিনেমা মুক্তির খবর শুনে খুশি হয়েছিলেন মান্না-ভক্তরা। কিন্তু সিনেমাটি মুক্তি না পাওয়ায় অপেক্ষার প্রহর আরও বাড়ল।

খসরু বলেন, ‘জীবন যন্ত্রণা’ মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা। সংগত কারণে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ দিন সামনে রেখে এটি মুক্তি দিতে চাই। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এটি মুক্তি দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে; যা দেশের বাইরে করাতে হবে। আমি মনে করি, তা ডিসেম্বরের আগেই করাতে পারব।

২০২১ সালের অক্টোবরে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে ‘জীবন যন্ত্রণা’। ছবিটি পরিচালনার পাশাপাশি কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জাহিদ হোসেন।

সিনেমাটি মুক্তিতে বিলম্বে কেন– জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘লীলামন্থন’ নাম দিয়ে সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম। ওই নামে ২০১১ সালে সেন্সরে জমা দিই। কিন্তু নাম নিয়ে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে সেন্সর পেতে দেরি হয়। নানা জটিলতায় এরপর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। করোনার কারণে এর মুক্তি দুবছর পিছিয়ে যায়। আগে থার্টি ফাইভে সিনেমা শুট করা হতো– এটা সবাই জানেন। ‘জীবন যন্ত্রণা’ থার্টি ফাইভে শুট হয়েছিল। থার্টি ফাইভ থেকে টেলিফিল্মে ট্রান্সফার করার জন্য সিনেমার নেগেটিভ নিয়ে বোম্বেতে যেতে হবে। নতুন করে কালার গ্রেডিংও করা দরকার। এ কারণে একটু সময় লাগবে। প্রযোজক গত বছর সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ভারতে যেতে পারেননি বলে সিনেমার মুক্তি আটকে যায়। হয়তো আগামী বছর শুরুর দিকে সিনেমাটির মুক্তি পরিকল্পনা করতে পারব।

এই সময়ে এসে ১৬ বছর আগের সিনেমার মুক্তি ব্যবসায়িক ঝুঁকিতে পড়বে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মাতা বলেন, আমি তা মনে করি না, এই সময়ে এসেও তারকাবহুল সিনেমাটির আবেদন একটুও কমবে না। এটি মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা। এর সময় ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আমি যেভাবে গল্প লিখি তাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আমি মনে করি। আশা করছি এটি এখনও দর্শকপ্রিয় একটি সিনেমা হবে।

তিনি আরও বলেন, বেশ যত্ন নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করেছি। মান্না এ সিনেমার অন্তঃপ্রাণ। তার শিডিউল পেয়েছিলাম ১০ দিনের। শেষ দৃশ্যটি তিনি করে যেতে পারেননি। এর আগেই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় হন। পরে ডামি ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলায় তার শহীদ হওয়ার দৃশ্যটি করেছি। সিনেমার ১২টি গল্পের নায়কই মান্না। তিনি একেবারে নতুনভাবে হাজির হবেন সিনেমায়, যা দেখলে দর্শক সহজেই বুঝতে পারবেন।

২০০৬ সালে ‘লীলামন্থন’ নামে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়। প্রায় তিন বছর সময় নিয়ে ২০০৮ সালে শেষ হয় এর দৃশ্য ধারণ। সিনেমার শেষ দৃশ্য ও ডাবিংয়ের কাজ শেষ করে যেতে পারেননি মান্না। পরে আংশিক ডাবিং করেন অভিনয়শিল্পী রাতিন। সিনেমার বাকি কাজ গুছিয়ে ২০১১ সালে সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়ার পর নামের কারণে তা আটকে থাকে। তখন নাম বদলানো না হলেও ১০ বছর পর নাম বদলে সেন্সর ছাড়পত্র পেল সিনেমাটি।

প্রসঙ্গত, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যৌনপল্লীগুলোর পরিস্থিতি, যৌনকর্মীদের ভেতরকার দ্বন্দ্ব, স্বাধীনতার সময়ে কারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বা বিপক্ষে ছিল—এমন বিষয়গুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ‘জীবন যন্ত্রণা’ সিনেমায়। এতে মান্না ছাড়াও অভিনয় করেছেন মৌসুমী, পপি, মিশা সওদাগর, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *